রাঙামাটিতে চাহিদার শীর্ষে ‘রেড চিটাগং’


পাহাড় নিউজ ডেস্ক।

আপডেটের সময়ঃ জুন ২৭, ২০২৪

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পবিত্র ঈদুল আযহায় পশু কোরবানীর জন্য বেশ কয়েক দশক ধরে পছন্দের শীর্ষ স্থান দখল এবং বাজার মাতিয়ে রাখছে রাঙামাটির ‘রেড চিটাগং’ জাতের গরু। গরুগুলো পাহাড়ি প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে বেড়ে উঠার কারণে এর চাহিদা ব্যাপক। সারাদেশে দিনে দিনে এ জাতের গরুর চাহিদা বেড়েই চলেছে ।

গরুগুলো কম চর্বিযুক্ত এবং সুস্বাদু মাংসের জন্য অতুলনীয়। এ জাতের গরুগুলো মাঝারী এবং ছোট আকারের হলেও দাম কিন্তু কম নয়। মাঝারী আকারের গরুগুলো বাজার দর দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা এবং ছোট আকারের গুলো ৬০হাজার থেকে দুই লাখ টাকার মধ্যে বিক্রি করা হচ্ছে ।

পশু বিক্রেতা নাজিম উদ্দিন বলেন, ছয়জন তরুণ মিলে পশুর ব্যবসাতে নেমেছেন তারা। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ত্রিশটি পশু ক্রয় করলেও অগ্রিম একুশটি পশু বিক্রি করে ফেলেছেন নিজেদের স্থান থেকে। হাটেও তোলতে হয়নি। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে নিজেরা আর বেশি পশু ক্রয় করবেন। বর্তমানে তাদের হাতে আড়াই লাখ টাকা দামের রেড চিটাগং জাতের গরু সংগ্রহে রয়েছে বলে জানান তিনি।

পশু বিক্রেতা মো, সাইফুদ্দীন বলেন, তার কাছে চল্লিশটি গরু সংগ্রহে আছে। বাজার এখনো জমে উঠেনি। কয়েকটি গরু বিক্রি হয়ে গেছে। তিনি আশা করছেন বাজার জমে উঠলে লাভের মুখ দেখবেন তিনি।

জেলা শহরের পৌর ট্রাক টার্মিনাল পশুর হাটে গরু নিয়ে আসা মো. গফুর বলেন, জুরাছড়ি উপজেলা থেকে ত্রিশটি গরু নিয়ে এসেছেন। সত্তর হাজার থেকে শুরু করে তার কাছে দুই লাখ টাকার গরু আছে। বাজার ভাল হলে তিনি লাভ করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন।

এদিকে জেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট বসেছে শহরের পৌর ট্রাক টার্মিনাল এলাকায়। হাটে উল্লেখযোগ্য পশু এখনো উঠেনি। ব্যবসায়ীরা বলছেন কোরবানীর তিন আগে হাট জমজমাট হয়ে উঠবে। ক্রেতারা বিছিন্ন ভাবে বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের প্রিয় পশু সংগ্রহ করছে। আবার অনেকে পশু রাখার ঝামেলা এড়াতে দেরিতে পশু ক্রয় করে থাকেন।

রাঙামাটি জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: এ,কেএম, ফজলুল হক বলেন, ‘রেড চিটাগং’ জাতের গরুগুলো হালকা জাতের গড়ন হওয়ায় পাহাড়ি এলাকায় সহজে লালন পালন সহজ হলেও ফ্রিজিয়ান গরুগুলো ভারী হওয়ায় পাহাড়ি এলাকায় পালন করা সহজ নয়। জেলায় এইবার কোরবানীর পশু চাহিদা রয়েছে ৫৯হাজার ৯৪৬টি। পশু আছে ৬৪হাজার ৯৯৮টি। উর্দ্বৃত পাঁচ হাজার ৫২টি পশু জেলার বাইরে বিক্রি করা হবে।

প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আরও বলেন, জেলায় ১৯টি বসেছে। ১৯টি হাটে ১৯টি মেডিকেল টিম পশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করবে।

রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী বলেন, রাঙামাটি পৌরসভার পক্ষ থেকে পরিবেশ দূষণ রোধে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিক রাখতে পৌরসভার আওতাধীন ৯টি ওয়ার্ডের ৪২টি স্থানে পশু জবাইয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, পশুর হাটগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি জাল টাকা সনাক্তে মেশিন বসানো হয়েছে। হাটে সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রাখা হয়েছে বলে যোগ করেন জেলা প্রশাসক।

পার্বত্য জেলা রাঙামাটি ফলমূলের জন্য যেমন বিখ্যাত তেমনি এখানকার স্থানীয় ‘রেড চিটাগং’ জাতের গরুর জন্য বেশ কয়েক দশক ধরে সারাদেশে আলাদা সুপরিচিতি পেয়েছে। জেলা প্রাণী সম্পদ অফিস এ অঞ্চলে দেশী তথা রেড চিটাগং জাতের গরুগুলোর উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণে কাজ করছে।